আজকের তারিখঃ | বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বাউফলের পশ্চিম নওমালা নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষকের দুর্নীতি ও অনিয়ম আইন উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দিলেন এ্যাড.মানিক লাল আচার্য্য বরিশালের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী মাছের দাম বরিশালে টেইলার্সের কারখানা থেকে শ্রমিকের লাশ উদ্ধার কতটা কার্যকর হবে মানবাধিকার কমিশন খসড়া অধ্যাদেশ ২০২৫ নেপালে অভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচনী হাওয়া উন্নয়নের রোল মডেল ভিয়েতনাম আপনি চাকরি করবেন নাকি চাকরি দিবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আপনি ছিলেন থাকবেন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখার ৭টি কাঠামো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা: সম্পাদনা: অনুসন্ধানী প্রতিবেদন যেভাবে ভেঙে যায় সালমান-ঐশ্বর্যর প্রেম থাইল্যান্ডের ম্যাসাজ আসলেই আলাদা : প্রিয়ন্তী উর্বী ডিজিটাল সহিংসতার শিকার ২৯ অভিনেত্রী নববধূর সাজে নজর কাড়লেন সেলেনা গোমেজ সাহস তো দ্যাহাইছি, এবার দুঃসাহস দেহাতি আইছি শবনম ফারিয়ার আসল রূপ, দেশে থাকলে শুধু ভণ্ডামি করে আপনারা হয়তো আমার ফ্যামিলি সম্পর্কে জানেন না আমি আরও ৯৮ বাচ্চার মা হতে চাই : পরীমণি অর্চিতা স্পর্শিয়া রোগে আক্রান্ত, চাইলেন দোয়া

কুয়াকাটা সড়কের হাজিপুর সেতুতে টোলের নামে রশিদ ছাড়াই দ্বিগুণ ভাড়া আদায়

রিপোর্টারের নাম: বরিশাল খবর
  • সংবাদ প্রকাশের তারিখ : Oct 11, 2025 ইং
  • ৭৮১ বার
ছবির ক্যাপশন:

অনলাইন নিউজ: পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের হাজিপুর সেতুতে সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে দ্বিগুণ হারে ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নির্ধারিত নিয়ম উপেক্ষা করে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের টোল আদায়কারীরা যাত্রী, পর্যটক ও পরিবহন চালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। অভিযোগ রয়েছে- রশিদ ছাড়াই প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার টোল আদায় করা হচ্ছে, ফলে সরকারও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।

চরম অব্যবস্থাপনা, টোল আদায়কারীদের দুর্ব্যবহার, পণ্যবাহী ট্রাক থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং কৌশলে রাজস্ব ফাঁকিসহ নানা অনিয়মে চলছে হাজিপুর টোলপ্লাজায়। এতে ক্ষুব্ধ চালক, স্থানীয় বাসিন্দা ও কুয়াকাটাগামী পর্যটকরা।

প্রতিদিন হাজার হাজার ছোট-বড় যানবাহন এই সেতুর মাধ্যমে চলাচল করে। তবে বিশেষভাবে কুয়াকাটা পর্যটনগামী বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, এবং আলিপুর-মহিপুর মৎস্যবন্দরগামী ট্রাকগুলোর কাছ থেকেই দ্বিগুণ হারে টোল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় চালকরা জানান, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও প্রশাসন থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মাঝে মধ্যে জরিমানা করা হলেও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

সওজ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুনে হাজিপুর সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব পায় বরিশালের যেটি মোঃ মাহফুজ খান লিমিটেড'র প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেলী ফিলিং স্টেশন, যেটি মোঃ মাহফুজ খান কর্তৃক পরিচালিত। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ৫,৮৫,৮২,৫০০ টাকায় তিন বছরের জন্য (মেয়াদ জুন ২০২৭ পর্যন্ত) ইজারা নেয়।

অন্যদিকে, চলতি বছরের ৮ অক্টোবর কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদীর উপর নির্মিত আন্ধারমানিক সেতুটিও একই প্রতিষ্ঠান ১৫,৫৩,৯৪,৫০০ টাকায় ইজারা নেয়।

যদিও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রতিটি যানবাহনের জন্য নির্দিষ্ট টোলহার নির্ধারণ করেছে, তবে বাস্তবে তা উপেক্ষা করে চলছে অবৈধ আদায়।

সরে জমিনে দেখা যায়, হাজিপুর টোলপ্লাজায় প্রায় প্রতিটি যানবাহন থেকেই নির্ধারিত টোলের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা নেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো রশিদ প্রদান করা হয় না। সরকারি নির্ধারিত ফি অনুযায়ী একবার যাতায়াতের জন্য মিনি ট্রাক ৭৫ টাকা হলেও আদায় করা হয় ১৫০ টাকা, বড় বাস ১০০ টাকা কিন্তু আদায় করে ১৫০-২০০ টাকা, মোটরসাইকেল ৫ টাকা কিন্তু আদায় করা হয় ১০ টাকা করে, মাইক্রোবাস (৮–১৫ সিট) ৪০ টাকা কিন্তু আদায় করা হয়৭০-৮০ টাকা, হেভি ট্রাক ২০০ টাকা কিন্তু আদায় করা হয়। ৩০০-৪০০ টাকা, তিন চাকার মোটর চালিত টমটম করা হয় ৫০-৭০ টাকা।

বরগুনা থেকে আসা মিনি ট্রাক চালক জাকির হোসেন বলেন, তালিকায় ভাড়া ৭৫ টাকা, কিন্তু এখন তারা আদায় করছে ১৫০ টাকা। কোনো প্রতিবাদ করলে টোলকর্মীরা খারাপ আচরণ করে।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মোটরসাইকেল আরোহী রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা সাতটি মোটরসাইকেল একসাথে এসেছি। মোট ৭০ টাকা দিয়েছে, কিন্তু কোনো রশিদ দেয়নি। পরে জানতে পারলাম টোল আসলে ৫ টাকা। এভাবে পর্যটকদের কাছ থেকে নিয়মিত বেশি টাকা নেওয়া আমাদের জন্য হয়রানি।

টাঙ্গাইল থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা ঢাকা মেট্র-ব-১২- ১২৯৬ এর বাস সুপারভাইজার মোঃ হারুন বলেন, আন্দারমানিক টোল দিয়েছি ১৮০ টাকা হাজিপুর টোল রেখেছে ১৬০ টাকা, হাজীপুর টোল ভাড়া বেশি রেখে থাকলে তো অনিয়ম। ম্যমো চেয়েছি কিন্তু তারা বলেছে লাগবে না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে টোল আদায়ের কারণে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে কুয়াকাটা গামী পর্যটক সহ মহিপুর ও আলিপুরের মৎস্য ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে।

মেসার্স বেলী ফিলিং স্টেশন-এর পরিচালক মোঃ মাহফুজ খানের সঙ্গে মুঠোফুলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সুপারভাইজার মোঃ আরিফ হোসেন জানায়, আমার জানামতে এইভাবে টোলে কোন বেশি ভাড়া আদায় হয় না। এখন আদায়কারীরা যদি কিছু করে তা আমার জানা নাই। আমার মনে হয় না ওরা তেমন কিছু করে তারপরেও একটু যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। টোল থেকে হাতে লেখা কোন রশিদ দেয়া হয় না সবকিছু ডিভাইস সিস্টেম।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জামিল আক্তার লিমন বলেন, হাজীপুর টোলের ইজারাদার এর সাথে কথা বলে দেখছি। আপনার কাছে কোন গাড়ির নাম্বার থাকলে পাঠান।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেন, আমি উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি তাই হাজিপুর প্লাজার ভাড়া সম্পর্কে তেমন অবগত না। যদি অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কোন অভিযোগ পেয়ে থাকি তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের উদাসীনতা ও পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে ইজারাদাররা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রশিদ ছাড়া অর্থ আদায়, পর্যটকদের হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী টোল আদায়ে স্বচ্ছতা ও রশিদ প্রদানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও হাজিপুর সেতু টোলপ্লাজায় তা মানা হচ্ছে না। ফলে ভুক্তভোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন, আর সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে লাখ টাকার।


কমেন্ট বক্স

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী

বরিশাল খবর অফিস: সিএন্ডবি রোড, বরিশাল

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669 / 01712596354

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি

© বরিশাল খবর সর্বস্ব সংরক্ষিত

Developed by : BDIX ROOT