চুল না কেটে ক্লাশে আসায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে একটি স্কুল ও কলেজের গণিত শিক্ষক আয়শা বেগম ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রের চুল কাটতে গিয়ে মাথা কাটার অভিযোগ উঠেছে।বৃহস্পতিবার দুপুরে (২৫ সেপ্টেম্বর) শহরের গাজি কমপ্লেক্সে স্কুল চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শিক্ষক আয়শা বেগমের বিচার দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াছ হোসেন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক আয়শা বেগম চুল কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির ওই দুই ছাত্র ক্লাশের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে আসছে। ভয় দেখানোর জন্য তাদের চুল কাটার ভয় দেখানো হয়েছে মাত্র, ব্লেডের আঘাতে সামান্য চুল কাটতে গিয়ে মাথার সামনের কিছু অংশ কেটে যায়। বৃহস্পতিবার ওই দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিদ্যালয়ে আসার আগেই আমি লক্ষ্মীপুর কলেজে চলে আসছি।
লিখিত অভিযোগ সূত্র জানা যায়, রায়পুর শহরের গাজি কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলায় বেসরকারি রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্ররা প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে এসে ক্লাশ করছিল। স্কুল চলাকালে বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষার শিক্ষক আয়শা বেগম হঠাৎ করে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে সহপাঠীদের সামনে ইয়াসিন ও রিশাদের চুল ব্লেড দিয়ে কাটতে গিয়ে মাথার সামনে অংশ কেটে ফেলেন। এ সময় রক্ত বের হলে সাময়িক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
কী অপরাধে চুল কাটা হয়েছে, জিজ্ঞাসা করলে ইয়াসিন ও রিশাদ বলেন, চুল ছোট করার পরও ম্যামের পছন্দ হয়নি, তাই আবারও চুল কাটতে বাধ্য করছিলেন, চুল না কেটে স্কুলে আসার অপরাধে মাথার সামনের অংশই কেটে ফেলে।
এ ঘটনায় দুই শিশুছাত্র মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সহপাঠীদের সামনে লজ্জিত হয়। পরে ইয়াসিন ও রিশাদ বিষয়টি তাদের মা-বাবাকে জানালে তারা বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করে লিখিত অভিযোগ জানান।
শিশুছাত্র ইয়াসিন ও রিশাদ হোসেন জানায়, শিক্ষক আয়শা বেগম বিনা অপরাধে তাদের চুল কেটে দেন, সঙ্গে মাথার সামনের অংশও কেটে দেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তোরা মাথার চুল কেন কাটলি না, তাই তোদের চুল কেটে দেওয়া হলো।’
প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলাবোধ সৃষ্টির জন্য ছাত্রীদের একটু ভয় দেখানো হয়েছে। তবে কোনো শিক্ষক ছাত্রের চুল কাটতে পারেন না, একটু ভয় দেখানো হয়েছে। তারপরও ছাত্রীর অভিভাবক ও শিক্ষকের সঙ্গে সমঝোতা করিয়ে দেওয়া হবে।
রায়পুর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন বলেন, দুই স্কুলছাত্রের চুল কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। রোববার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।