স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও ভালো হবে।
তিনি জানান, সাম্প্রতিক দুর্গাপূজার সময় অসুর প্রতিমার মুখে দাড়ি লাগানোর ঘটনায় জড়িত ৭০০-এরও বেশি মানুষের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সাভারের আশুলিয়ায় বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রে বৌদ্ধ ধর্মের কঠিন চীবর দান উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই ধারা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে।
সাম্প্রতিক দূর্গাপূজা চলাকালীন অসুরের প্রতিমার মুখে দাড়ি লাগানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কঠোর পদক্ষেপের কথা জানান। তিনি বলেন, যারা এই দাড়ি লাগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আমরা জিডি করেছি এবং তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য মামলা করা হচ্ছে। যারা এই অপকর্মটা করেছে, খুব তাড়াতাড়ি তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট নিয়ে সম্প্রতি এনসিপি নেতা নাহিদের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, আপনার প্রশ্ন আপনি করতে পারেন, যার যার প্রশ্ন সে করতে পারে।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের মূলনীতি হলো অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে সবাইকে আবদ্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বুদ্ধের অনুসারীরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বুদ্ধের মতে মানুষ মৈত্রী পরায়ণ, ক্ষমাশীল এবং নির্মোহ হবে; একে অন্যকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করবে। উপদেষ্টা বৌদ্ধ ধর্মের পঞ্চশীলের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই পাঁচটি মৌলিক নীতি মানবতাবাদী ও সার্বজনীন অধিকারমূলক, যা মানবজীবনে সুনীতিপরায়ণ হওয়ার জন্য উত্তম শিক্ষা। তিনি বিশ্বাস করেন, এসব গুণাবলি চর্চার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রে অন্যায়, অবিচার, অনাচার, অপরাধ, দুর্নীতি বন্ধ হবে।
অতীশ দীপঙ্করের অবদান তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘অতীশ দীপঙ্কর শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের সম্পদ। তার নামে দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সর্বদা বদ্ধপরিকর। তিনি জানান, দেশের সকল বৌদ্ধ বিহারে আশ্বিনী পূর্ণিমার পর হতে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান কর্ম শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল বিরাককোডি, সাবেক অতিরিক্ত সচিব প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামানসহ অন্যরা।